সরকারি কর্মচারীদের মতো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীরাও পাবেন পাঁচ শতাংশ সরল সুদে গৃহনির্মাণ ঋণ সুবিধা। সর্বোচ্চ ৭৫ লাখ টাকা পর্যন্ত এ গৃহঋণ পাবেন শিক্ষকরা।
এ বিষয়ে চলতি মাসের মধ্যেই প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে। সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের বাজেট অনুবিভাগ-১ এর অতিরিক্ত সচিব মো. হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে এ-সংক্রান্ত একটি সভা হয়েছে। সভায় ছয়জন শিক্ষক প্রতিনিধিসহ বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় উপস্থিত একাধিক শিক্ষক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের যুগ্ম মহাসচিব মেহেদী হাসান জানান, অর্থ মন্ত্রণালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, শিক্ষকরা ৬৪ বছর পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবেন। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীরাও এ ঋণ পাবেন। সবকিছু ঠিক থাকলে এ মাসের মধ্যেই চূড়ান্ত প্রজ্ঞাপনের জন্য এটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যাবে।
এদিকে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করতে কাজ করছে অর্থ বিভাগ।
এর আগে ২০১৮ সালের ১৭ অক্টোবর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের এ ঋণের আওতায় আনা যায় কি-না তা ভেবে দেখতে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ। পরে ওই বছরের ৩০ জুলাই অর্থ বিভাগ থেকে ‘সরকারি কর্মচারীদের জন্য ব্যাংকিং-ব্যবস্থার মাধ্যমে গৃহ নির্মাণ ঋণ প্রদান নীতিমালা-২০১৮’ প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, চাকরি স্থায়ী হওয়ার পাঁচ বছর পর থেকে সরকারি চাকরিজীবীরা এই ঋণ পাওয়ার যোগ্য হবেন। আর আবেদনের জন্য সর্বোচ্চ বয়সসীমা হবে ৫৬ বছর। এ ঋণের সীমা ঠিক করা হয়েছে ২০ লাখ থেকে ৭৫ লাখ টাকা পর্যন্ত। ঋণ পরিশোধের জন্য সর্বোচ্চ সময় ২০ বছর।
এ ঋণের জন্য ব্যাংক ১০ শতাংশ হারে সরল সুদ নেবে। অর্থাৎ চক্রবৃদ্ধি সুদ (সুদের ওপর সুদ) নেয়া হবে না। তবে ঋণগ্রহীতাকে দিতে হবে ৫ শতাংশ। বাকিটা সরকারের পক্ষ থেকে পরিশোধ করা হবে ভর্তুকি হিসেবে। যারা শুধু সরকারি স্থায়ী পদে চাকরি করেন তারাই এ ঋণ পাবেন। চুক্তিভিত্তিক, খণ্ডকালীন, অস্থায়ী ভিত্তিতে নিযুক্ত এবং স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কেউ এই ঋণ পাবেন না।
কোন স্কেলে কতো টাকা ঋণ:
# জাতীয় বেতন স্কেলে প্রথম থেকে পঞ্চম গ্রেডভুক্তরা ঢাকাসহ সব সিটি কর্পোরেশন ও বিভাগীয় সদরের (উপ-সচিব থেকে সচিব পদমর্যাদার) জন্য ৭৫ লাখ, জেলা সদরের জন্য ৬০ লাখ এবং অন্য এলাকার জন্য ৫০ লাখ টাকা ঋণ নিতে পারবেন।
# ৬ষ্ঠ থেকে ৯ম গ্রেডভুক্তরা ঢাকাসহ বিভাগীয় সদর এলাকার জন্য ৬৫ লাখ, জেলা সদরের জন্য ৫৫ লাখ এবং অন্য এলাকার জন্য ৪৫ লাখ টাকা ঋণ পাবেন।
# ১০ম থেকে ১৩তম গ্রেডভুক্তরা ঢাকাসহ বিভাগীয় সদরের জন্য ৫৫ লাখ, জেলা সদরের জন্য ৪০ লাখ এবং অন্য এলাকার জন্য ৩০ লাখ টাকা ঋণ পাবেন।
# ১৪তম থেকে ১৭তম গ্রেডভুক্তরা ঢাকাসহ বিভাগীয় সদরের জন্য ৪০ লাখ, জেলা সদরের জন্য ৩০ লাখ এবং অন্য এলাকার জন্য ২৫ লাখ টাকা ঋণ পাবেন।
# ১৮তম থেকে ২০তম গ্রেডভুক্তরা ঢাকাসহ বিভাগীয় সদরের জন্য ৩০ লাখ, জেলা সদরের জন্য ২৫ লাখ এবং অন্য এলাকার জন্য ২০ লাখ টাকা ঋণ পাবেন।
পাঠকের মতামত