খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা সময়ে সোমবার রাতে বাংলাদেশ সফরে এসেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
তিন দিনের এ সরকারি সফর শেষে বুধবার নিজ দেশে ফিরবেন তিনি। তার এ সফর নিয়ে দুই দেশের পক্ষ থেকেই বলা হচ্ছে, দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখবে।
জয়শঙ্কর নিজেও ঢাকা পৌঁছেই আশা প্রকাশ করেছেন, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক উচ্চমাত্রায় পৌঁছাবে।
তবে মঙ্গলবার তার সঙ্গে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠকের পর তা আর দ্বি-পাক্ষিক থাকেনি।
সঙ্গত কারণেই সেখানে উঠে এসেছে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া লাখ লাখ রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেয়ার কথা।
এ জন্যই সময়টাকে খুব গুরুত্বপূর্ণ বলছেন, কূটনীতিকরা। আর মাত্র একদিনই পরই আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের একটা অংশকে দেশে ফিরিয়ে নেয়ার তারিখ নির্ধারণ করেছে মিয়ানমার।
আমরা জানি, গত শুক্রবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে বলেছে, বাংলাদেশ ২২ হাজার রোহিঙ্গার যে তালিকা পাঠিয়েছে, তার মধ্যে থেকে ৩ হাজার ৫৪০ জনকে ফিরিয়ে নিতে রাজি হয়েছে মিয়ানমার। ২২ আগস্ট তাদেরকে ফিরিয়ে নেয়া হবে।
যদিও সংশয় আছে আদৌ কি রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেবে মিয়ানমার? গত দুই বছরে দেশটি কয়েকবার এ ধরনের প্রতিশ্রুতি দিয়েও শেষ পর্যন্ত রক্ষা করেনি।
তাই এ নিয়ে সংশয় তৈরি হওয়াটাই স্বাভাবিক। রোহিঙ্গাদের নিয়ে এই প্রথমবারের মতো ভারত সরাসরি বলেছে, তারাও চায় রোহিঙ্গারা নিজ দেশে ফিরে যাক।
আর এজন্য প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারত সহযোগিতা করবে। জয়শঙ্করের মন্তব্য, ‘রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়া বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সঙ্গে ভারতেরও জাতীয় স্বার্থ জড়িয়ে আছে।’
অনেকদিন পর হলেও রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে সত্যিটা উপলব্ধি ভারত। আর ভারতের এমন অবস্থান নিশ্চয়ই বাংলাদেশকে শক্তিশালী করবে।
কেননা গত দুই বছরে আন্তর্জাতিকভাবে অনেকবার চেষ্টা করা হয়েছে এই সমস্যা সমাধানের জন্য।
এমনকি জাতিসংঘও একাধিকার পদক্ষেপ নিয়েছে। কিন্তু ফলাফল কিছুই আসেনি। এই অবস্থায় ভারত যদি সত্যিকার অর্থে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন নিয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সঙ্গে কাজ করে, তাহলে ইতিবাচক ফলাফল আসতে পারে।
আমরা মনে করি, রোহিঙ্গারা শুধু বাংলাদেশেরই সমস্যা না, ভারতসহ পুরো দক্ষিণ এশিয়ারই বড় সমস্যা। সেটা সবাইকে উপলব্ধি করতে হবে। তবেই এই সমস্যার দ্রুত সমাধান হবে।
পাঠকের মতামত